ব্রেকিং নিউজ

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের করণীয়

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের করণীয়

বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের সম অধিকার, মানব সত্বার মর্যাদা, মৌলিক মানবাধিকার ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। তদুপরি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ অনুসমর্থন করছে বাংলাদেশে। তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ প্রণীত হয়েছে। এই আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি মাইল ফলক। এতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের সুরক্ষার জ্ন্য জাতীয় পর্যায়ে, জেলা, উপজেলা ও শহর এলাকায় কমিটি গঠনের বিধানসহ সামগ্রিকভাবে তাদের অধিকার রক্ষার জন্য নানাবিধি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯, ইউনিয়ন পরিষদ (পরিকল্পনা) বিধিমালা এবং ইউনিয়ন পরিষদ অপারেশনাল ম্যানুয়েল অনুসারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নিন্মরুপ ভাবে কর্যক্রম গ্রহণ করবে:

১. উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণকে অগ্রাধিকার প্রদান:
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদ পঞ্চবার্ষিক এবং বিভিন্ন মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদ অপারেশনাল ম্যানুয়াল এবং ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনা বিধিমালা অনুসরণ করবে। ওয়ার্ড সভার মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা নিরুপন করা হবে।ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সচিব ওয়ার্ড সভায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের দুরবস্থা লাঘব এবং তাদের প্রয়োজন পূরণে সকল নাগরিককে সম্পৃক্ত করবেন।

২. বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা:
ইউনিয়ন পরিষদ অপারেশনাল ম্যানুয়ালে বাজেট প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হিসেবে বলা হয়েছে, “বাজেট তৈরি করার সময় বিবেচনায় রাখাতে হবে যেন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুদের ও যুবদের কল্যাণ, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধগণের জন্য যথেষ্ট বরাদ্দ থাকে”।

৩. ‍উন্নয়ন কর্মসূচি তথা স্কিম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের প্রয়োজন বিবেচনা করা:
লোকাল গভর্ন্যন্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপিঃ২) ইউনিয়ন পরিষদ গভর্ন্যন্স প্রজেক্ট (ইউপিজিপি)- অথবা অন্য কোন প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন পরিষদকে যে অর্থায়ন করা হয়ে থাকে সে অর্থ দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদ যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, পানি সরবারহ, শিক্ষা, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও বাজার উন্নয়ন, পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন করতে পারে। এর মধ্যে যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, পানি সরবারহ, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের উন্নয়নে কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে। এসব খাতে কাজ করার সময় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের ব্যবহার ‍উপযোগিতার কথা বিবেচনায় নিতে হবে।

৪. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের অধিকার সম্পর্কে জন সচেতনতামূলক কর্মসূচি:
প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সমাজে বা পরিবারে বাড়তি বোঝা নয়। মানব মর্যাদা এবং মানবিক অধিকার একজন স্বাভাবিক মানুষের এবং একজন প্রতিবন্ধী মানুষের সমান। ইউনিয়ন পরিষদ এ বিষয় জন সচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ইউনিয়ন পরিষদের অংশীজন (Stakeholder) হিসেবে বিবেচিত। পিছিয়ে পড়া শ্রেনি ও গোষ্ঠীর মানুষেকে অপরাপর মানুষের সমান অবস্থানে নিয়ে আসার জন্য যে সুবিধা  প্রদান আবশ্যক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের জন্যও ততটুকু প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:
ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা, এদের মধ্যে পুরুষ, নারী, শিশুর সংখ্যা, তাদের জন্য গৃহীত কর্মসূচী ও সুবিধাদি ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করার পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তেগণের তালিকা সংরক্ষণ ও হালনাগাদ করা আবশ্যক, যাতে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক ব্যক্তিকে সহজে এবং সময়মতো নির্বাচন করা যায়।

৬. সভাসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অংশগ্রহণ:
ইউনিয়ন পরিষদের নয়টি ওয়ার্ডে বছরে দু’টি করে ১৮টি ওয়ার্ড সভা; ১৩টি স্থায়ী কমিটি প্রতি দুই মাসে একটি করে সভা; ইউনিয়ন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি প্রতি দু’মাসে একটি করে সভা; বাজেট চুড়ান্ত অনুমোদন করার আগে উন্মুক্ত বাজেট সভঅ আয়োজন করা হবে। সভাসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের প্রতিনিধিত্ব এবং উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৭. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণকে বিশেষ সুবিধাদি প্রদান:

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে, প্রচলিত আইন অধ্যদেশ ও বিধি বিধানের পরিপন্থী নয়, এরুপ জনস্বার্থ ও জনস্বার্থ ও জন গুরুত্বপূর্ন কোন জরুরী কাজ সম্পাদন করতে নির্দেশ দিতে পারবেন এবং এ ধরণের কাজ সম্পাদনের ব্যয়ভার পরিষদের তহবিল হতে বহণের নির্দেশ দিতে পারবেন। এ বিধানের পেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার‌ম্যান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ এখতিয়ারবলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণের বিশেষ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নিতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই

রুয়ান্ডার গণহত্যা

মুরাম্বি কারিগরী বিদ্যালয়ে সংঘটিত গণহত্যার শিকারদের খুলি “আর কখনোই নয়“ এই প্রত্যয় নিয়ে প্রতিবছরের ৭ এপ্রিল রুয়ান্ডা তার রাষ্ট্রে ঘটে...