অবদানে-অর্জনে হয়েছে প্রমাণ শ্রমে ও সেবায় নারী সমান সমান (মর্যাদায় গড়ি সমতা)
মর্যাদায়
গড়ি সমতা
নারী
গৃহস্থলি কাজসহ মজুরিবিহীন কাজের মাধ্যমে যে অবদান রেখে চলছে তা তুলে ধরতেই ”মর্যাদায়
গড়ি সমতা” প্রচারাভিযান। শুধু অর্থনৈতিক মূল্য না থাকার কারণে বা মজুরিহীণ হওয়ায় নারীর
সারা দিনের কাজ মূল্যায়ন করা হবে না বা তাদের এই অবদানকে স্বীকার করা হবে না- এই দৃষ্টিভঙ্গির
পরিবর্তন খুব জরুরি। এ বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে বা সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে
জাতীয় অর্থনীতিতে গৃহস্থলি কাজের অন্তর্ভুক্তি নারীদের অদৃশ্য অবস্থা থেকে মুক্ত করে
নারীশ্রমকে দৃশ্যমান করে তুলবে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদানকেও তুলে ধরবে।
নারীর কাজের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক হল-
- ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের একজন নারী সমবয়সি একজন পুরুষের তুলনায় প্রায় তিন গুন সময় এমন কাজে নিয়োজিত থাকে যা জিডিপিতে ধরা হয়নি।
- একজন নারী মজুরিবিহীন কাজে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮ ঘন্টা এবং একই কাজে একজন পুরুষ প্রতিদিন ২.৫ ঘন্টা সময় ব্যয় করে।
- একজন নারী প্রতিদিন গড়ে ১২.১টি মজুরিবিহীন কাজ করে, যা জিডিপিতে যোগ করা হয় না। পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরণের কাজের সংখ্যা ২.৭টি।
- প্রতিস্থাপন পদ্ধতি (কাজের ছায়ামূল্য ব্যবহার করে) অনুযায়ী, জাতীয় আয়ের হিসেবে (জিডিপি) অন্তর্র্ভক্ত করা হয় না এমন কাজ, যেগুলো নারী করছে, তার আনুমানিক বার্ষিক মূল্য (২০১৩-১৪ অর্থবছ) জিডিপি’র প্রায় ৭৬.৮ শতাংশের সমপরিমাণ।
এক নজরে নারীর এমন কাজের
খয়িয়ান: যা গণনা করা হয় না
- জিডিপিতে গৃহশ্রমভিত্তিক শ্রমিকদের বার্ষিক অবদান প্রায় ১৫০ বিলিয়ন টাকা (২.৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারি পরিসংখ্যানে এই অবদান প্রতিফলিত হয় নাই।
- বাংলাদেশে গড় নারীরা তাদের বিনামূল্য শ্রমের মাধ্যমে বার্ষিক ৪৭৬৫ টাকা (১৩৩.১৪১ ডলার) করে অর্থনীতিতে অবদান রাখে।
- পরিসংখ্যানের বাইরে থাকা এই কাজের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগ অবদান নারীর আর শতকরা ৫ ভাগ অবদান পুরুষের।
- শহরের বা গ্রামের একজন নারী ঘরে বাইরে মিলিয়ে দৈনিক গড়ে ১৬ থেকে ২০ ঘন্টা প্রায় ৪৫ ধরণের কাজ করে।
- গ্রামের নারীরা ৫৩ শতাংশ সময় ব্যয় করে কৃষি ও শিল্পের মতো অর্থনৈতিক কাজে। অথচ সেখানে পুরুষ ব্যয় করে ৪৭ শতাংশ।
- সংসারে নারীকে পুরুষের চাইতে ১৫ গুন বেশি কাজের বোঝা বহন করতে হয়ে।
- যদি আমরা নারীর অবমূল্যায়িত কাজের অংশ জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ করতে পারি, তাহলে জাতীয় উৎপাদনে নারীর অবদান ২৫ শাতাংশ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশ হয়ে যাবে।
সূত্র:
নারীর অবদানের স্বীকৃতি: গবেষণার ফলাফল ও কৌশলপত্র থেকে নেয়া তথ্য।
কোন মন্তব্য নেই